শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

কামালকে হত্যায় ব্যর্থ হয়ে নানা অপপ্রচার করা হয়: প্রধানমন্ত্রী

তরফ নিউজ ডেস্ক: চুয়াত্তর সালের ১৬ ডিসেম্বর একটা চক্রান্ত করে কামালকে গুলি করা হয়। তাকে হত্যারও চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সে যখন বেঁচে যায়, তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালানো হয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, অথচ রাষ্ট্রপতির ছেলে বা প্রধানমন্ত্রীর ছেলে, জাতির পিতার ছেলে। অত্যন্ত সাদাসিধে জীবন-যাপন করতো। কখনো বাবা প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি সে জন্য অর্থ সম্পদের দিকে তার কোনো দৃষ্টি ছিল না। ব্যবসা-বাণিজ্যের দিকে তার কোনো দৃষ্টি ছিল না।

বৃহস্পতিবার শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন এবং ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার, ২০২১’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের শহিদ শেখ কামাল অডিটরিয়ামে যুক্ত হন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশকে গড়ে তোলা, দেশের মানুষের পাশে থাকা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা সাংস্কৃতিক অঙ্গন এ সব কিছুই ছিল তার কাছে সব থেকে বড়। অত্যন্ত সাদাসিধে জীবন যাপন করতো। আমার ছোট ভাই, আমি নিজে বলতে পারি। এত সাদাসিধে জীবন যাপন করতো। সে একজন সংস্কৃতি মনা, আবার রাজনীতিবিদ। কখনো বিলাস ব্যাসন- এসব দিকে তার দৃষ্টি ছিল না। এটা আমার বাবার শিক্ষা ছিল, মায়ের শিক্ষা ছিল। তাছাড়া একটা যুদ্ধ বিদ্ধস্ত দেশ, সেখানে তো বিলাসিতা করার সুযোগ নেই। ব্যবসা বাণিজ্য, অর্থ-সম্পদ এ সব দিকে তার কোনো নজরই ছিল না। ক্রীড়া সংগঠনগুলোকে আরো ভালোভাবে গড়ে তোলাই ছিল তার লক্ষ্য।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ১৫ আগস্ট যদি বাঙালির জীবনে না ঘটতো, তাহলে এই বাঙালি অনেক আগেই বিশ্বে একটা মর্যাদা নিয়ে চলতো। এই হত্যার পর বাংলাদেশকে ইসলামিক রিপাবলিক অব বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল। যদিও সেটা টিকে নাই। কাজেই চক্রান্তটা কোথায়, কীভাবে ছিল সেটা নিশ্চয়ই দেশের মানুষ এত দিনে উপলব্ধি করতে পারে। আর কত বড় বিশ্বাসঘাতকতা সেটাও আপনারা নিশ্চয়ই উপলব্ধি করতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে জাতির জন্য আমার বাবা এত ত্যাগ স্বীকার করলেন। বছরের পর বছর জেল খাটলেন। বার বার যাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হলো। নিজের জীবনকে তিনি তুচ্ছজ্ঞান করে এই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম করে এই দেশকে স্বাধীন করলেন। এই বাঙালি জাতিকে একটা পতাকা দিলেন। একটা স্বাধীন রাষ্ট্র উপহার দিলেন। একটা জাতি হিসেবে আত্মপরিচয়ের সুযোগ দিলেন। যাদের জন্য এই ত্যাগ স্বীকার করলেন, যুদ্ধ বিদ্ধস্ত দেশ তিনি গড়ে তুলছেন। সেখানে এই দেশের মানুষই, কিছু সংখ্যক ষড়যন্ত্র করে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করলো।

তিনি বলেন, সব থেকে ট্রাজেডি কামালের জন্য যে নূর আর কামাল এক সাথে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কর্নেল আতাউল গনি ওসমানির এডিসি হিসেবে কাজ করেছে। যখন বাসা আক্রমণ করে কামাল নিচের বারান্দায় চলে যায়। ও যখন দেখে যে নূর-হুদা এরা এক সাথে ঢুকছে ও তাদেরকে বলেছিল যে আপনারা এসে গেছেন? খুব ভালো হয়েছে। দেখেন বাসা কারা আক্রমণ করেছে। এই কথা শেষ করতে পারেনি ওই নূরের হাতের অস্ত্রই গর্জে ওঠে। ওরা ওখানেই কামালকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে।

‘আমার আব্বা যেমন সারা জীবন এই দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন, সন্তান হিসেবে আমরাও। একদিকে যেমন পিতৃস্নেহ বঞ্চিত হয়েছি। কিন্তু আমরা কখনো সেই কষ্টকে কষ্ট মনে করিনি। আমার মা সেটা করতে দেননি। কোনো হা-হুতাশ বা অতিরিক্ত কোনো চাওয়া সেগুলি আমাদের ছিল না। খুব সাধারণভাবে জীবন-যাপন করা, একটা আদর্শ নিয়ে চলা এবং দেশকে ভালোবাসা, দেশের মানুষকে ভালোবাসা, দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করা-এটাই আমাদের শিক্ষা। সেই শিক্ষাই কামাল সব সময় অনুসরণ করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আর রেহানা দুজনে বিদেশে ছিলাম তাই বেঁচে গিয়েছি। কিন্তু হারিয়েছি আমাদের সবাইকে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের জন্য যদি কিছু করে যেতে পারি সেটাই সব থেকে বড়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com